April 19, 2024, 4:35 am

সিলেটে পশুর হাটে পানি, দুশ্চিন্তায় খামারিরা

যমুনা নিউজ বিডিঃ নিজ খামারে ২৩টি গরু নিয়ে উদ্বিগ্ন নগরীর কাস্টঘরের জসিম উদ্দিন। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ধার-দেনা করে ২৩টি গরু আট মাস ধরে খামারে রেখে পরিচর্যা করছেন তিনি। খামারে রয়েছে তিনজন শ্রমিক। কিন্তু তৃতীয় দফার বন্যায় পানিতে তলিয়ে যায় জসিম উদ্দিনের গরুর খামার। অগত্যা খাামারের গরুগুলো মেইন রাস্তার পাশে একটি ত্রিপল টাঙিয়ে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু ঈদের মাত্র সাত দিন হাতে থাকলেও দুঃশ্চিন্তার অন্ত নেই জসিমের। যে হাটে তিনি গরুগুলো বিক্রির জন্য তুলবেন, সেই হাটে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পানি। সিলেটের বৃহত্তম পশুর হাট নগরীর কাজিরবাজার। কিন্তু পশুরহাটে এখনও হাটু পানি। ফলে গবাদি পশু বিক্রি ও ক্রেতা নিয়ে আশঙ্কা করছেন খামারিরা। বন্যায় এখন তলিয়ে আছে সেই এলাকা। এ কারণে হাট বসেনি সেখানে। কবে হাট বসবে, জানে না কেউ।

জেলার বেশিরভাগ হাটগুলো তলিয়ে যাওয়ায় পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিরা। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালবাজার এলাকার খামারি আব্দুস সাত্তার প্রায় ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে খামার গড়ে তুলেছেন। সেখানে এখন বিক্রির জন্য উপযুক্ত গরু আছে ৪০টি। ঈদে সেগুলো বিক্রি করবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু এখনও হাট না বসায় তিনি লোকসানের শঙ্কায় আছেন। সাত্তার বলেন ‘হাটের জায়গাগুলো এখনও পানির নিচে। পানি কবে কমবে তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। হাট বসবে কি না এ নিয়েও শঙ্কায় আছি।’ শেষ দিকে হাট বসলেও আশানুরূপ ব্যবসা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বন্যায় সব মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত। এখন জীবন বাঁচানোই দায় হয়ে উঠেছে অনেকের। কোরবানি দেওয়ার মতো পয়সা বেশিরভাগের হাতেই নেই। এ কারণে এবার পশু বিক্রি কমে যাবে। আবার বিক্রি হলেও আশানুরূপ দাম পাওয়া যাবে না।’ তিনি জানান, পানি উঠে গেছে বলে খামারেও এখন গরু রাখা যাচ্ছে না। আছে গো-খাদ্যের সংকট। হতাশ কণ্ঠে বলেন, ‘গরুগুলো না পারছ রাখতে, না পারছি বিক্রি করতে।’

নগররের কাজিরবাজার পশুর হাটও তলিয়ে আছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ৮ থেকে ৯ দিন ধরে তলিয়ে ছিল এই হাট। দুদিন আগে পানি নেমেছিল। তবে বুধবার থেকে আবার পানি উঠেছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ দিন ধরে এই হাটের সব কাজ বন্ধ। কাজিরবাজার পশুর হাটের ব্যবস্থাপক শাহাদাত হোসেন লোলন জানান, সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার খামারি ও ব্যবসায়ীরা ট্রাকে করে পশু নিয়ে আসেন। এবার বন্যার বেশিরভাগ সড়ক তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে কেউ পশু নিয়েও আসতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘আমাদের হাটে বন্যার পানি থাকায় কোরবানির হাটের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারিনি। বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাটে স্থানীয় খামারি ও ব্যবসায়ীরা পশু নিয়ে আসেন। কিন্তু এবারের বন্যায় স্থানীয়রা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কারও পালিত পশু মারাও গেছে। সড়ক ভেঙে যাওয়ার কারণে অনেকে পশুর গাড়ি নিয়ে নাও আসতে পারেন। তাই কোরবানির হাটে পশু ওঠা ও দামের ক্ষেত্রে এবার প্রভাব পড়বে।’ সিলেট জেলা ও মহানগরে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৪১টি কোরবানির পশুর হাট বসার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। তবে বন্যার কারণে এবার হাট বসতে কিছুটা দেরি হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে কোরবানির জন্য সিলেটে দুই লক্ষাধিক পশু প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো রুস্তম আলী।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD