March 19, 2024, 3:11 am

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধারা হতাশ

স্টাফ রিপোর্টার: প্রায় ৯ বছর পর বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন হওয়ার সুযোগ এলেও শেষ মুহূর্তে তা স্থগিত হয়ে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা। একই সঙ্গে তারা এর পিছনে ‘ষড়যন্ত্র’ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। হেলাল মোর্শেদ খান বীরবিক্রম-এর নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ শেষ হয় ২০১৭ সালের ৮ জুন।

পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ওই বছরের ১৯ জুলাই কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসক নিয়োগ করে সরকার। কিন্তু প্রশাসক নিয়োগের কারণে নানা সমস্যার কথা জানিয়ে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এরপর ২০২১ সালের ১৮ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এরই কার্যকরণের অংশ হিসেবে গত মাসে নির্বাচনী তফশিল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী আজ সোমবার (১০ এপ্রিল) ছিল মনোনয়ন পত্র গ্রহণের শেষ দিন এবং ১৩ মে সারাদেশে এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু গতকাল বগুড়াসহ বিভিন্ন স্থানে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিক্রি শেষে খবর আসে এই নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।

এই নির্বাচনের বগুড়া জেলার রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াসমিন এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন এই নির্বাচন স্থগিত করা সংক্রান্ত চিঠি তার কাছে এসেছে গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার রঞ্জিত কুমার দাস সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্বাচন স্থগিত করার জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচন ২০২২-২৩ নির্বাচন কমিশনের ৮ম সভার সিদ্ধান্তক্রমে অনিবার্য কারণবশত নির্বাচন অনুষ্ঠানের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

এই স্থগিতের কথা জানার পর প্রার্থীরা ছাড়াও সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে হতাশার পাশাপাশি ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছ। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বগুড়া জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার রুহুল আমিন বাবলু বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির মুখে সংসদের নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর একটা আশার আলো জেগেছিল, নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে।

একই সঙ্গে এই নির্বাচনের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ করা যাবে। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এখনও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে এ ঘটনা তারই প্রমাণ । কারণ তারা চায়না মুক্তিযোদ্ধারা ঐক্যবদ্ধ থাকুক। তিনি বলেন এই অশুভ শক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের প্রতিহত করা না গেলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে।

আরও বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারাও অনুরূপ মনোভাব প্রকাশ করে বলেছেন, ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এক শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা নামধারী যে ঘটনাগুলো ঘটিয়েছিল, তাদেরই ছায়া পাওয়া যাচ্ছে এ সব কর্মকান্ডে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD