October 13, 2024, 2:32 pm
যশোর প্রতিনিধি: যশোরের বেনাপোল সীমান্তে গুলিতে নিহতের ৪৩ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর সদস্য রইস উদ্দীনের মরদেহ ফেরত দেয়নি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিএসএফ এর সঙ্গে পতাকা বৈঠকে হত্যার প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে রইসের মরদেহ ফেরত চেয়েছে বিজিবি। সোমবার (২২ জানুয়ারি) ভোর ৫ টার দিকে বিএসএফের গুলিতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন।
রইস উদ্দীন চাপাইনবাবগঞ্জের মনকশা ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের কামরুজ্জামানের ছেলে। তিনি ৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির বেনাপোল সীমান্তের ধান্যখোলা জেলেপাড়া বিজিবি ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন।
রইস উদ্দীন হত্যাসহ গত ৩ বছরে শুধুমাত্র বেনাপোল-শার্শা সীমান্তে ৫ জনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে বিএসএফের বিরুদ্ধে। এছাড়া সীমান্ত থেকে অজ্ঞাত অনেক মরদেহ উদ্ধার হলেও দুর্বল তদন্তে তার জট খোলেনি।
বিজিবি সদস্য হত্যার ঘটনায় বেনাপোলের ঘিবা গ্রামের আব্দুল বারি জানান, তিনি ভোর রাতে পর পর ৭ রাউন্ড গুলির শব্দ পান। পরে ভোরে লোক মুখে শুনতে পান এক বিজিবি সদস্যকে বিএসএফ ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে। এটি দুঃখজনক ঘটনা।
সীমান্তবাসী করিম জানান, এর আগেও সীমান্তে বিএসএফের নির্যাতনে বাংলাদেশি হত্যা ও ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আমাদের আতঙ্কে থাকতে হয়।
আমির হোসেন জানান, বিএসএফের হাতে বিজিবি সদস্য হত্যার ঘটনা শুনছি। বাংলাদেশি নাগরিক হিসাবে নিন্দা জানাচ্ছি।
৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জামিল আহম্মেদ প্রেস লিস্ট দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ২২ জানুয়ারি আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে বিজিবি যশোর ব্যাটালিয়নের ধান্যখোলা বিওপি’র জেলেপাড়া পোস্ট সংলগ্ন এলাকায় ভারত থেকে আসা একদল গরু চোরাকারবারীদের সীমান্ত অতিক্রম করে আসতে দেখলে দায়িত্বরত: বিজিবি টহল দল তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা দৌড়ে ভারতের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিজিবি টহল দলের সদস্য সিপাহী মোহাম্মদ রইস উদ্দীন চোরাকারবারীদের পিছনে ধাওয়া করতে করতে ঘন কুয়াশার কারণে দলবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। প্রাথমিকভাবে তাকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায়, সে বিএসএফের গুলিতে আহত হয়ে ভারতের অভ্যন্তরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ঘটনার পরপরই এ বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করা হয় এবং জানা যায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় উক্ত সৈনিক মারা গেছেন। এ বিষয়ে বিএসএফকে বিষয়টির ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানোর পাশাপাশি কূটনৈতিকভাবে তীব্র প্রতিবাদ লিপি পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও মৃতদেহ বাংলাদেশে দ্রুত ফেরত আনার বিষয়ে সব পর্যায়ে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে সীমান্ত হত্যা বন্ধে দফায় দফায় পতাকা বৈঠক ছাড়াও দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের সীমান্ত বৈঠক হয় এ সময়। এসব বৈঠকে হত্যা ও নির্যাতন বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনোটাই রক্ষা করেনি বিএসএফ। একের পর এক ঘটছে হত্যার ঘটনা।