October 11, 2024, 7:43 am
যমুনা নিউজ বিডি: জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজায় দুই মাসের জন্য যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটি কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে বিবেচনার জন্য এই প্রস্তাব ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের কাছে ইতিমধ্যে পাঠানো হয়েছে। ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল, সিএনএনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রস্তাবে হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তি প্রক্রিয়াকে কয়েকটি স্তর বা পর্যায়ে ভাগের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। জিম্মিদের মধ্যে যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশি এবং অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন, সবার আগে তাদের মুক্তি চায় ইসরায়েল।
পরবর্তী পর্যায়গুলোতে আটক ইসরায়েলি নারী সেনাসদস্য, বেসামরিক তরুণ-তরুণী ও পুরুষ সেনাসদস্যদের মুক্তির ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়েছে প্রস্তাবে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, এই জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দী বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে। তবে কতজনকে মুক্তি দেওয়া হবে- সেই সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইনেত জানিয়েছে,গতকাল সোমবার জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেখানে আটক জিম্মিদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
এদিকে এএফপি জানিয়েছে, প্রস্তাবে যুদ্ধ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেয়নি ইসরায়েল। তবে বলেছে, গাজার প্রধান শহরগুলোতে ইসরায়েলি সেনাদের উপস্থিতি হ্রাস করা হবে এবং যুদ্ধ শুরুর পর উপত্যকার যেসব ফিলিস্তিনি বাড়িঘর ছেড়ে তাদেরকে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে আসার অনুমতি দেওয়া হবে।
ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, জিম্মিদের মুক্তির পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে দু’মাস সময় নেবে বলে ধারণা করছেন তারা। এই সময়সীমায় গাজায় কোনো অভিযান চালানো হবে না।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের এই প্রস্তাব সাম্প্রতিক সময়ের যেকোনো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের চেয়ে বেশি ইতিবাচক। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এক্সিওসকে বলেন, ইসরায়েল এখন সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং হামাসের জবাবের জন্য অপেক্ষা করছে। আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতির উন্নয়ন ও আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে তারা আশাবাদী।
এর আগে অবশ্য হামাস জানিয়েছিল, গাজায় স্থায়ীভাবে আগ্রাসন বন্ধ না হলে বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে হামাস যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে। হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমানবাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থলবাহিনীও।
ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার বোমাবর্ষণে গত প্রায় সাড়ে তিন মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন ২৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার এবং ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণে ধসে যাওয়া বিভিন্ন ভবনের ধ্বংস্তূপের নিচে এখনো চাপা পড়ে আছেন অন্তত কয়েক হাজার মানুষ।
গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘোষিত এক মানবিক বিরতির সাত দিনে মোট ১০৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বাকি ১৩২ জন এখনো তাদের হাতে আটক রয়েছে।
সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, সিএনএন