October 16, 2024, 8:09 am

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বগুড়ায় শারদীয় দুর্গোৎসব

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে বগুড়ায় শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৫৭মিনিটে বিহিতপূজা ও দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। এরপর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়।
এর আগে দুপুরের পর থেকে শহরের ফুলবাড়ী, দত্তবাড়ী, এসপি ব্রিজ ঘাট, ভাটকান্দি ব্রিজ ঘাট, বেজোড়া ঘাটে জড়ো হতে থাকে শহরের বিভিন্ন মন্ডপের প্রতিমা। শহরের দত্তবাড়ী ঘাটে প্রতিমা বিসর্জনের সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী, বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টাসের এআইজি (ক্রাইম এনালাইসিস) ও জেলা পুলিশ সুপারের সহধর্মীনী সুনন্দা রায়, ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কবিরাজ তরুণ কুমার চক্রবর্ত্তী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল শরাফত ইসলাম, সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ প্রমুখ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য। চন্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্যদিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে আনন্দময়ীর আগমনে গত ২০ অক্টোবর থেকে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। পরবর্তী ৫দিন বগুড়ার বিভিন্ন পূজামন্ডপ গুলোতে পূজা-অর্চণার মধ্যদিয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যো দিয়ে তা শেষ হয়। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) আসেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, রোগ-শোক, হানাহানি ও মারামারি বাড়বে। অন্যদিকে কৈলাশে (স্বর্গে) বিদায়ও নেবেন ঘোড়ায় চড়ে। যার ফলে জগতে মড়ক ব্যাধি এবং প্রাণহানির মতো ঘটনা বাড়বে। সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে যা তার বাবার গৃহ।
বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জনে অংশ নিতে দুপুর গড়িয়ে যেতেই ভক্তরা বগুড়ার বিভিন্ন এলাকার পূজামন্ডপ থেকে ঢাকের বাদ্য আর গান-বাজনা ছাড়া বিদায়ের করুণ ছায়ায় সারিবদ্ধভাবে ট্রাকে করে প্রতিমা নিয়ে শহরের করতোয়া নদীর এসপি ব্রিজ, দত্তবাড়ী, ফুলবাড়ী, চেলোপাড়াসহ বিভিন্ন ঘাটগুলোতে আসেন হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এসময় রাস্তার পাশে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বগুড়া পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, আমরা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিমা বিসর্জন দিতে পেরেছি। বগুড়া শহরসহ পুরো জেলায় কোন রকম অসুবিধা হয়নি। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ বছর বগুড়ার ১২টি উপজেলায় ৭০৭টি মণ্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরমধ্যে পৌর শহরে পূজার সংখ্যা ছিল ৬২টি। সারাদেশে এবছর ৩২হাজার ৪০৮টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD