March 28, 2024, 11:03 am

জাতীয় শোক দিবসে বগুড়ায় আওয়ামীলীগের দিনব্যাপী কর্মসূচি পালিত

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের আয়োজনে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

সোমবার (১৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে সাতটায় জাতীয় ও সাংগঠনিক পতাকা অর্ধনমিত, কালো পতাকা উত্তোলন,৮:৩০ টায় শোক র‍্যালি ও আলোচনা সভা, দুপুর ২ টায় অন্ধ মাদ্রাসায় এতিম ছাত্রদের মাঝে উন্নত খাবার বিতরণ, বাদ আছর বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শাহাদত বরণকারী সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মজিবর রহমান মজনুর সভাপতিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু।

সভাপতির বক্তব্যে মজিবর রহমান মজনু বলেন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্য ধানমন্ডির বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল।

পৃথিবীর এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত এবং তার ছেলে আরিফ ও সুকান্তবাবু, মেয়ে বেবি, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে রক্ষা পান। সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া। ইতিহাসের জঘন্যতম এই হত্যাকাণ্ডের পরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।দ্য টাইমস অব লন্ডন এ উল্লেখ করা হয় ”সবকিছু সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকে সবসময় স্মরণ করা হবে। কারণ, তাকে ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তব কোনো অস্তিত্ব নেই।”একই দিন লন্ডন থেকে প্রকাশিত পত্রিকায় বলা হয়েছে, ”বাংলাদেশের লাখ লাখ লোক শেখ মুজিবের জঘন্য হত্যাকাণ্ডকে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করবে।”

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদ বিচারের হাত থেকে খুনিদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে।পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সকে আইন হিসেবে অনুমোদন করে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের জঘন্যতম এই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করে রাখে।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সুদীর্ঘ একুশ বছর পর ক্ষমতায় এলে ১৯৯৬ সালের ১৪ নভেম্বর খুনিদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করতে পার্লামেন্টে ইনডেমনিটি আইন বাতিল করা হয়। একই বছরের বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহকারী (পিএ) এ এফ এম মোহিতুল ইসলাম পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সংঘটিত নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানা একটি এফ আই আর দাখিল করেন।১৯৯৭সালের সিআইডি এই মামলায় ২০ জনকে অভিযুক্ত করে মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে চার্জশিট দাখিল করে,একই বছরের ১২মার্চ ৬ আসামির উপস্থিতিতে আদালতে বিচার শুরু হয়। কিন্তু স্বাধীনতা- বিরোধী চক্রের নানা বাধার কারণে আটবার বিচার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। কোন এভাবে দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে ১৯৯৮সালের ৮ নভেম্বর মামলার রায়ে বিচারক ১৫ সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড রায় দেন।তারপর ২০০০সালে ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চ নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে তোমাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। সভাপতি তার বক্তব্যে আলো বলেন পরবর্তীতে ২০০১ সালের অক্টোবরের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে বিচার কাজ বন্ধ থাকে।দীর্ঘ ৬ বছর পর ২০০৭সালে রাষ্ট্রপক্ষের মুখ্য আইনজীবী বর্তমান সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সুপ্রিম কোর্টে আপিল শুনানি করে ৫ আসামি গনের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন।২০০৯ সালের চূড়ান্ত আপিল শুনানি শেষ হয় এবং আদালত ১৯ নভেম্বর রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন। ওইদিন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ৫ সদস্যের বেঞ্চে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৫ আসামির দায়ের করা আপিল আবেদন খারিজ করা হয়। ২০১০ সালের আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের রিভিউ খারিজ হয়ে গেলে ২৮ জানুয়ারি ৫ আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর করে জাতিকে দায়মুক্ত করা হয়।সরকার হত্যাকাণ্ডের বিচার করেছে এজন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বাকি পলাতক খুনিদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে মামলার রায় কার্যকর করা সহ কমিশন গঠন করে হত্যার নৈপথ্যে যারা ছিল তাদের মুখোশ উন্মোচন করার দাবি জানাচ্ছি।

আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ডঃ মকবুল হোসেন, টি জামান নিকিতা, অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন, আবুল কালাম আজাদ, অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন মুকুল, এডভোকেট রেজাউল করিম মন্টু, প্রদীপ কুমার রায়, মনজুরুল আলম মোহন, একেএম আসাদুর রহমান দুলু, সাগর কুমার রায়, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন নবাব, অধ্যক্ষ শাহাদাত আলম ঝুনু, অ্যাডভোকেট তবিবুর রহমান তবি, আব্দুল খালেক বাবলু, সুলতান মাহমুদ খান রনি, আব্দুল্লাহ আল রাজী জুয়েল, অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম আক্কাস, নাসরিন রহমান সীমা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনিসুজ্জামান মিন্টু, মাশরাফি হিরো, আনোয়ার পারভেজ রুবন, তপন চক্রবর্তী, এস এম রুহুল মোমেন, তারিক এস এম শাহজাহান, জহুরুল হক বুলবুল, খালেকুজ্জামান রাজা, আবু সেলিম, আতিকুর রহমান দুলু, অ্যাডভোকেট নরেশ মুখার্জি, অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষ শামসুল আলম জয়, অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম নাফরু, রাহুল গাজী, অধ্যক্ষ আহসানুল হক, তৌহিদুল করিম কল্লোল, সাইফুল ইসলাম বুলবুল,খাদিজা খাতুন শেফালি, আবু সুফিয়ান শফিক, রোমানা আজিজি রিংকি, আলমগীর হোসেন স্বপন, আলতাফুর রহমান মাসুক, কামরুল হুদা উজ্জ্বল, গৌতম কুমার দাস, আবু ওবায়দুল হাসান ববি, মাহফুজুল ইসলাম রাজ, আব্দুস সালাম, কামরুল মোর্শেদ আপেল, আলমগীর বাদশা, শুভাশিস পোদ্মার লিটন, সাজেদুর রহমান শাহিন, আমিনুল ইসলাম ডাবলু, মনজুরুল হক মঞ্জু,জুলফিকার রহমান শান্ত, অ্যাডভোকেট লাইজিন আরা লিনা, সাবরিনা পিংকি, ডালিয়া নাসরিন রিক্তা, রাকিব উদ্দিন সিজার, নুরুজ্জামান সোহেল, রাশিকুজ্জামান রাজন সহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করে।

অন্যদিকে দুপুর দুইটাই শিববাটি অন্ধ হাফিজিয়া এতিম মাদ্রাসা সহ বগুড়া শহরের চারটি অন্ধ মাদ্রাসার এতিম ছাত্রদের মাঝে উন্নত খাবার বিতরণ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু ও সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু।এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন এডভোকেট জাকির হোসেন নবাব, আব্দুল্লাহ আল রাজী জুয়েল, মাদ্রাসার সুপার সহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অতিথিবৃন্দ মাদ্রাসার এতিম ছাত্রদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ ই আগস্ট শাহাদাত বরণকারী সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের আয়োজনে বাদ আসর বাইতুর রহমান সেন্ট্রাল মসজিদে বঙ্গবন্ধুর সহ শাহাদত বরণকারী পরিবারের সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। উক্ত দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন জেলা আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ, টি জামান নিকিতা, অ্যাডভোকেট আমানুল্লাহ, শাহরিয়ার আরিফ ওপেল,অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন নবাব, সুলতান মাহমুদ খান রনি, আব্দুল্লাহ আল রাজী জুয়েল, মাশরাফি হিরো, আতিকুর রহমান দুলু, অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম দুলু, ইমরান হোসেন রিবন, কামরুল হুদা উজ্জ্বল, আলমগীর বাদশা, আমিনুল ইসলাম ডাবলু, মনজুরুল হক মঞ্জু, রাকিব উদ্দিন সিজার, রাশেদুজ্জামান রাজন প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD