September 20, 2024, 7:55 am

দেশ-জাতি ও সমগ্র মানবতার কল্যাণ কামনা

যমুনা নিউজ বিডিঃ পুরোনো খবরের কাগজ, মাদুর-পাটি, সিমেন্টের বস্তা কিংবা পলিথিন- টঙ্গীর তুরাগতীরে যে যেভাবে পেরেছেন, বিছিয়ে বসে পড়েছেন। সবারই অভিন্ন বাসনা- বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নেওয়া। মহান আল্লাহর দরবারে হাত তুলে, চোখের পানি ফেলে ক্ষমা চান মুসল্লিরা। তাঁরা দেশ-জাতি ও সমগ্র মানবতার কল্যাণ এবং প্রাত্যহিক জীবনে সমৃদ্ধি কামনাও করেন। মোনাজাতের সময়টাতে নীরবতা নামে পুরো ইজতেমা ময়দানে। শুধু শোনা যায় ‘আমিন, আমিন’ ধ্বনি।

এভাবেই আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে গতকাল রোববার শেষ হয়েছে তাবলিগ জামাত আয়োজিত ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। মোনাজাতে মুসলমানের জানমালের হেফাজত, মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে রক্ষাসহ বিশ্বশান্তি ও কল্যাণের পাশাপাশি আত্মশুদ্ধির জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করা হয়।

মোনাজাত পরিচালনা করেন দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের শীর্ষস্থ্থানীয় মুরব্বি মাওলানা সা’দ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সা’দ কান্ধলভী। তিনি আরবি ও উর্দু ভাষায় মোনাজাত পরিচালনা করেন। রোববার দুপুর ১২টা ১৫ মিটে মোনাজাত শুরু হয়ে ১২টা ৪৫ মিটে শেষ হয়। ৩০ মিনিটের মোনাজাতে মাওলানা ইউসুফ বিন সা’দ প্রথম ১১ মিনিট পবিত্র কোরআনে বর্ণিত দোয়ার আয়াতগুলো উচ্চারণ করেন। শেষ ১৯ মিনিট দোয়া করেন উর্দু ভাষায়। মোনাজাতের আগে বাদ ফজর বয়ান করেন মাওলানা মোরসালিন। পরে তা বাংলায় তরজমা করেন মাওলানা আশরাফুল।

মোনাজাতের সময় অনেক মুসল্লি বাসাবাড়ি-কলকারখানা-অফিস-দোকান ও যানবাহনের ছাদ এবং তুরাগ নদে নৌকায় অবস্থান নেন। মোনাজাত শেষে সড়ক, মহাসড়ক, রেলপথ, নৌপথ ধরে দলে দলে বাড়ি ফেরেন মুসল্লিরা। কেউ হেঁটে, কেউ ওঠেন বাসে, কেউ পিকআপ ভ্যানে; আবার অনেকে ঝুঁকি নিয়ে ওঠেন ট্রেনের ছাদে।

ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী মুসল্লিরা তো ছিলেনই, শুধু মোনাজাতে শরিক হতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লি জড়ো হন। প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বের মোনাজাতে অংশ নিতে দূরদূরান্ত থেকে এসেছেন নারীরাও। তাঁরা ময়দানের আশপাশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। হাসপাতালের মাঠে, পূর্ব থানা গেট, বাটা গেট ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চট ও পাটি পেতে মোনাজাতে অংশ নেন তাঁরা। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী-গাজীপুরসহ রাজধানী উত্তরার আশপাশের সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সর্বত্রই ছিল ছুটির আমেজ। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় এ পর্যন্ত ছয় মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে আবু তাহের (৬৫) নামের এক মুসল্লির মৃত্যু হয়।

রোববার ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সায়েম এ তথ্য জানান।

বিশ্ব ইজতেমা ও আখেরি মোনাজাত ঘিরে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা। র‌্যাব, পুলিশ, আনসার ব্যাটালিয়ন, গোয়েন্দা পুলিশসহ (ডিবি) বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। মোড়ে মোড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা ও র‌্যাবের হেলিকপ্টার দিয়ে টহল দেওয়া হয় ইজতেমার ময়দানসহ আশপাশের এলাকায়। এদিকে শনিবার রাত থেকে মোনাজাতের জন্য ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও কামারপাড়া সড়কসহ আশপাশের বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।

প্রতিবছর টঙ্গীর তুরাগতীরে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করা হয়। যেখানে যোগ দেন দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লি। ২০১৮ সালের বিরোধের পর বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের ও দিল্লির মাওলানা সা’দ কান্ধলভীর দুই পক্ষ ২০১৯ ও ২০২০ সালে আলাদা ইজতেমা করে। করোনার কারণে দু’বছর বন্ধ থাকার পর এবারও দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে ইজতেমা।

AddThis Sharing Buttons

Share to LinkedIn

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © jamunanewsbd.com
Design, Developed & Hosted BY ALL IT BD