September 20, 2024, 4:56 pm
জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২০ বাতিল, ভুলে ভরা নিম্ন মানের ছাপা পাঠ্যপুস্তক বাতিল এবং খাতা, কলমসহ সকল শিক্ষা উপকরণের দাম কমানোর দাবিতে দেশব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সকাল ১১ টায় বগুড়ার ঐতিহাসিক সাতমাথায় গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট বগুড়া জেলার বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বগুড়া জেলার সভাপতি ধনঞ্জয় বর্মন এর সভাপতিত্বে এবং ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলার কোষাধ্যক্ষ নাইম ইসলাম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি মোঃ সাদ্দাম হোসেন, বগুড়া জেলা সংসদের সভাপতি ছাব্বির আহম্মেদ রাজ, সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ রহমান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নিয়তি সরকার নিতু, জেলা সংগঠক চামেলী আক্তার, রিফাত ইসলাম রাব্বি প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ” জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২০ এ কিছু ভালো ভালো কথার আড়ালে শিক্ষা বৈষম্য, ব্যয় বৃদ্ধি ও রাষ্ট্রের দায়িত্বের প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে কৌশলে শিক্ষা ব্যবসাকে উৎসাহিত ও পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে। একজন শিক্ষার্থী যাতে একটা নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত সামগ্রিকতায় জ্ঞান লাভ করে- সেই কথা বলে প্রস্তাবিত শিক্ষাক্রমে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত একই বিভাগে শিক্ষা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।এতে বিজ্ঞান শিক্ষার পরিসর কমে এক তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর বদলে সেখানে যুক্ত করা হয়েছে ভালো থাকা, জীবন ও জীবিকা, পরিবেশ ও জলবায়ু – এ রকম নতুন কিছু বিষয়। ফলে বইয়ের বোঝা বাড়লেও শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। স্বল্প পরিসরে বিজ্ঞান পড়ে মাধ্যমিক শেষ করে উচ্চ মাধ্যমিকে গিয়ে হঠাৎ বিজ্ঞান বিভাগের পরিসর বেড়ে গেলে শিক্ষার্থীরা চাপের মুখে পড়বে এবং বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশুনা করতে নিরুৎসাহিত হবে। তাই আমরা জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২০ বাতিল করে শিক্ষার্থীদের জন্য একইধারার বৈষম্যহীন, বিজ্ঞানভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক, গণমুখী শিক্ষানীতি চালুর দাবি জানাচ্ছি।”
বক্তারা আরো বলেন, ” ৯ম-১০ম শ্রেণির বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা বইয়ে ১২ জানুয়ারি ১৯৭২ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের নিকট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ বাক্য পাঠ করেন বলে উল্লেখ আছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। এ রকম অনেক ঐতিহাসিক তথ্যগত ভুল, বানান ভুল, যতিচিহ্নের ভুল দ্বারা পূর্ণ এবারের বইগুলো। এছাড়া নিম্নমানের কাগজের ব্যবহার ও নিম্নমানের ছাপার কারণে বইগুলো বছরের শেষ পর্যন্ত টিকবে কিনা এমন প্রশ্নও উঠেছে। তাই আমরা ভুলে ভরা ও নিম্নমানের ছাপা পাঠ্যপুস্তক বাতিল করে মানসম্মত নতুন বই সরবরাহের দাবি জানাচ্ছি।”
এছাড়া বক্তারা খাতা-কলমসহ প্রতিটি শিক্ষা উপকরণের দাম ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বাড়ার ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বেকায়দায় পড়েছে উল্লেখ করে সকল শিক্ষা উপকরণের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার এবং ন্যায্যমূল্যে শিক্ষা উপকরণ সরবরাহের দাবি জানান।