December 8, 2023, 9:27 am
যমুনা নিউজ বিডিঃ শ্রীলঙ্কায় নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে দেশজুড়ে ফের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই আদেশ জারি করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জননিরাপত্তা রক্ষা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঠেকানো এবং সরকারি জরুরি সেবা ও সরবরাহ অব্যাহত রাখতে বর্তমান পরিস্থিতিতে এই আদেশ সমীচিন।’
গত এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত দেশজুড়ে কয়েক দফায় জরুরি অবস্থা জারি করেছে শ্রীলঙ্কার সরকার। সর্বশেষ গত সপ্তাহে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালানোর পর জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল। তবে রোববারই প্রথম দাপ্তরিক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হলো।
জরুরি অবস্থা জারির মানে দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়া। জননিরাপত্তা ও সরকারি সম্পদ ও স্থাপনা রক্ষায় এই সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারেন।
এছাড়া ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে তল্লাশি চালানোর ও জনবিক্ষোভ দমনের ক্ষমতাও দেওয়া হয় আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে।
শ্রীলঙ্কার রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশ অবশ্য নতুন এই আদেশের সমালোচনা করেছেন। দেশটির থিংকট্যাঙ্ক সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি অলটারনেটিভসের জ্যেষ্ঠ গবেষক ভবানি ফনসেকা রয়টার্সকে বলেন, ‘জরুরি অবস্থা জারি একটি ত্রুটিপূর্ণ পদক্ষেপ। কারণ নিকট অতীতেই দেখা গেছে— শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এটি তেমন কার্যকর নয়।’
তবে দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে সোমবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববারের বিজ্ঞপ্তি জারির পর সোমবার সকাল থেকে রাজধানী কলম্বো বেশ শান্ত অবস্থায় রয়েছে। যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে।
১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর বর্তমানে সবচেয়ে ভয়াবহ আর্থিক সংকট পার করছে শ্রীলঙ্কা। বর্তমানে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বলতে কিছু নেই। ফলে খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যও আমদানি করতে পারছে না দক্ষিণ এশিয়ার ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ অধ্যুষিত ছোট এই দ্বীপরাষ্ট্র।
এ পরিস্থিতিতে গত মার্চ থেকে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয় শ্রীলঙ্কায়। আন্দোলনের চাপে গত মে মাসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে। তারপর গত সপ্তাহে গোপনে দেশ থেকে পলায়ন করেন তার ছোটভাই ও শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। তার দেশ ত্যাগের পর থেকে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে আছেন।
দেশ ছাড়ার আগেই পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে গিয়েছিলেন গোতাবায়া। শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণও করেছে। এখন দেশটির সংবিধান অনুযায়ী একটি সর্বদলীয় সরকার গঠিত হবে। আর সেই সরকারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন পার্লামেন্ট সদস্যরা।
আগামী ২০ জুলাই হবে শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।