বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ২০২১, ০২:৪১ পূর্বাহ্ন
ষ্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়ায় জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাকবির ইসলাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আল আমিন নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ভোরে কাহালু উপজেলা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আল আমিন কাহালু উপজেলার বাসিন্দা। তার বাবার নাম আক্কাসী আলী। তিনি বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সম্মান শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। আল আমিন মামলার প্রধান আসামী আব্দুর রউফের সহযোগী। আব্দুর রউফ ওই কলেজের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ হত্যাকাণ্ডের পর তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়।
তাকবিরের মা আফরোজা ইসলামের করা মামলায় আলআমিনের নাম নেই। তাকে সিসি ক্যামেরায় ফুটেজের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শহরের সাতমাথা এলাকার সিসি ফুটেজে দেখা গেছে, আল আমিন চাপাতি হাতে তাকবিরের ওপর হামলা চালায়।
এসব নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবীর।
ওসি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আলআমিন হত্যাকাণ্ডে সম্পৃত্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাকে আদালতে পাঠানো হবে। আলআমিন আদালতে স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি দিবেন।
প্রসঙ্গত, বগুড়ায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘের্ষ ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তাকবির ইসলাম। তাকবির জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
মৃত্যুর আগে তার ওপর হামলার বর্ণনা দিয়ে গেছেন তিনি। এর একটি ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। ভিডিওতে নিহত তাকবির বলেছিলেন আব্দুর রউফ নিজেই তাকে ছুরিকাঘাত করেছেন।
গত মঙ্গলবার বিকেল ৩ টার দিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।
ছাত্রলীগ নেতা তাকবির ওই ভিডিওতে বলেন ‘আমার ডান পায়ে হাঁটুর নিচে ফ্র্যাকচার হইছে। ওখানে এসএফ পাইপ দিয়ে আর রড দিয়ে মারছে; চাপাতি দিয়ে আঘাত করছে। বাঁ হাতের কজ্বিতে আর কনুইয়ের মাঝখানেও মারছে, সেখানে ফ্র্যাকচার হইছে, ওখানে দুটা সেলাইও পড়ছে। মাথার পেছনে চারটা সেলাই পড়ছে, ওখানে চাপাতি দিয়ে আঘাত করছে। আমার কোমরের পাঁজরের নিচে দুই পার্শ্বেই দুটি স্টেপ (ছুরিকাঘাত) করেছে, আট ইঞ্চি করে ক্ষত হইছে। চার চারে আটটা সেলাই পড়ছে, স্টেপটা রউফ নিজেই করছে। শরীরে আরো অনেক জায়গায় ক্ষত হইছে, পুরো শরীরে পিটিয়েছে।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে মোটর সাইকেলের ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। শহরের টেম্পল রোডে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা তাকবিরসহ দুই গ্রুপের অন্তত ৯জন আহত হন।
সংঘর্ষের ঘটনায় সদর থানায় দুটি পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের হয়। গত শনিবার পৃথক দুটি মামলা করেন তাকবির ইসলামের মা আফরোজা ইসলাম ও আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য সোহাগ হাসান।
ছাত্রলীগ নেতা তাকবিরের মায়ের করা মামলায় সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখার ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফকে প্রধান আসামী করা হয়। রউফসহ এ মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩০ থেকে ৩৫জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলায় অন্য নামীয় আসামীরা হলেন, জাহিদ হাসান, আনোয়ার হোসেন, মো. তারেক, বিধান চন্দ্র মোহন্ত , নিশাদ ও আরমান।
ছাত্রলীগ নেতা সোহাগের করা মামলায় তাকবিরকে প্রধান আসামী করা হয়। তাকবিরসহ এ মামলায় ১২জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাত আরো ২০ থেকে ২৫জনকে আসামী করা হয়েছে।
সোহাগের করা মামলায় অন্য নামীয় আসামীরা হলেন, তোফায়েল আহমেদ, হাসিবুল হাসান শান্ত, আব্দুল্লাহ ঈমন, জয় কুমার দাস, শাহাদত জামান সঞ্জয়, সামিউল পরান সজল, সিজান রহমান, ফেরদৌস আলম সাফি, মাহবুবুল সাফিন, হাবিবুর রহমান ও মেহেদী হাসান।