বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ২০২১, ০১:৪২ পূর্বাহ্ন
নয়ন রায় ঃ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য বাদ্যযন্ত্র ঢাক-ঢোল বিলীনের পথে। যুগ পরিবর্তনের সাথে সাথে হারিয়ে যেতে বসেছে দেশীয় সংস্কৃতি বাদ্যযন্ত্র ঢাক,ঢোল,কর তাল,তবলা। আগের দিনের মত আর দেশীয় সংস্কৃতি বাদ্যযন্ত্রের তেমন চাহিদা নেই। তবে অনেক কষ্ট করে বাপ-দাদার পেশা হাল ধরে আছে অনেকেই। কিন্তু চাহিদা মোতাবেক পারিশ্রমিক না পাওয়ায় এ পেশা ছেড়ে যাচ্ছে অনেকে। জন্মের পর থেকে বাব-দাদার কাছ থেকে এই বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার করতে শিখে তারা পরে আস্তে আস্তে এই বাদ্যযন্ত্র তৈরী করতে শিখিয়েছেন। এক সময়ে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের চাহিদা অনেক গুনে বেশি ছিল। এখন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে তাল দিতে না পেরে তাদের মুল ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে দ্বাড়িয়েছে। প্রথমে বাপ-দাদরাই এ পেশা শরু করেন দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের তৈরী ও মেরামতের কাজ। যেমন- ঢাক-ঢোল,করকা,খোল,তবলা,একতারা,খমর,দো-তারা,ঢোলকসহ সাইড ড্রাম। বর্তমানে এ পেশায় কাজ করে সংসারের ভরণ-পোষণ কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বছরে তিন মাস আশ্বিন,কার্ত্তিক,অগ্রাহয়ন মাস কাজে চাপ থাকে। এই তিন মাসেই হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বিভিন্ন স্থানে অষ্টপ্রহরসহ প্রতি বাড়ীতে ও মন্দিরে হরিনাম কীর্তন করে বেড়ায় এরাই মূলত দেশীয় সংস্কৃতি বাদ্যযন্ত্রের ক্রেতা । এ ছাড়াও নিজস্ব বাসা বাড়ীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের লোকেরা কিছু কিছু বাদ্যযন্ত্র তৈরী করে ও মেরামত করে থাকেন। প্রতিটি খোল নতুন করে তৈরী করে ক্রেতার কাছে বিক্রি করে দুই হাজার পাঁচ শত টাকা থেকে চার হাজার টাকা। তবলা বিক্রি করে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা । সাইড ড্রাম তৈরীতে চার হাজার টাকা । দো-তারা তৈরীতে চার হাজার টাকা। জিপাসি তৈরীতে আট শত টাকা। । গোপি যন্ত্র(খমক) ছয় শত টাকা। এ ছাড়াও শিশুদের জন্য বাদ্যযন্ত্র খেলনা সামগ্রী তৈরী করে থাকে । খোল,সাইড ড্রাম,দো-তারা তৈরীতে সময় লাগে চার থেকে পাঁচ দিন। অন্যন্যা বাদ্যযন্ত্র তৈরী সময় লাগে দুই থেকে তিন দিন। বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতাদের দেশীয় বাদ্যযন্ত্র তৈরীতে বছরে এই তিন মাস কাজ করে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা কোন রকমে আয় হয়। সংস্কৃতি বাদ্যযন্ত্র গুলো ধরে রাখতে হলে আধুনিকায়ন খুবেই জরুরী,তেমনি জরুরী সরকারের নেক দৃষ্টি। সেই সাথে বাদ্যকার সম্প্রদায়ের পরিবার গুলোতে খোঁজ-খবর নেওয়া। তা না হলে একদিন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ঢাক-ঢোল, তবলা,একতারা,দো-তারা,বিলীন হয়ে যাবে।
ছবি ঃ ইন্টারনেট।